রান্নাঘরের সু-অভ্যাস, এখানে 9 টি অভ্যাসের উল্লেখ করা হল যাতে রান্নাঘরের পরিমণ্ডল অস্বাস্থ্যকর না হয়, খাবার ভাল হয় ও পরিবারের সবার স্বাস্থ্য অটুট থাকে
আমরা কেউই সামগ্রিক ভাবে নিখুঁত নয় তাই হয়ত অনেক মানুষের মধ্যে হয়ত কিছু অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস থাকে। কিন্তু কিছু সু-অভ্যাস পরিবারের সবার স্বাস্থ্য রক্ষায় ভীষণভাবে কার্যকরী হয়। অনেকেই রান্নাঘর ভালোভাবে গুছিয়ে রাখেন না। কিন্তু গোছানো আর পরিচ্ছন্ন রান্নাঘর মানেই বাড়তি কিছু সুবিধা আছে, একথা গৃহিণীরা মানবেন। গোছানো রান্নাঘরে হাতের কাছে সবকিছু যেমন নিমেষে খুঁজে পাওয়া যায়, তেমনি রান্নাও করা যায় নির্বিঘ্নে।
এর মধ্যে রান্নাঘরের কিছু বাজে অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। যেমন অনেকেই হয়তো রান্নাঘরের কল খুলে রাখা বা রান্না না থাকলেও উনুন জ্বালিয়ে রাখেন ইত্যাদি । এ ধরনের অভ্যাস নানাভাবে পারিবারিক সুস্বাস্থের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তাই ত্যাগ করা উচিৎ এমন কয়েকটি অভ্যাসের কথা আলোচনা করলাম :-
রান্নাঘরের সু-অভ্যাস, পরিবারের সুস্বাস্থ্যের জন্য: ৯ টি
1. সিঙ্ক বেয়ে জল পড়া
অনেকেই মাঝে মাঝে রান্না ঘরে জলের ট্যাপ বন্ধ করতে ভুলে যান, ফলে সিঙ্ক বেয়ে জল পড়া । আবার কখনো সিঙ্কের নিচে থাকা পাইপেও ফুটো থাকে জল চুঁইয়ে পড়তে পারে। রান্নাঘর যাতে এভাবে স্যাঁতসেঁতে না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখুন। এতে রান্নাঘরে আরশোলা বাসা বাঁধতে পারে । এতে নানা রকম রোগ ছড়ায়। খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ডায়রিয়া এভাবে বাড়তে পারে। জল ছাড়া এক সপ্তাহের বেশি বাঁচতে পারে না আরশোলারা । তাই রান্নাঘরে কোথায় জল পড়ছে, তা দ্রুত সারিয়ে নিন ও ট্যাপ ঠিকমতো বন্ধ করুন।
আরও পড়ুন: ভেজিটেবিল চপ রেসিপি, বাড়িতে দোকানের মত সুস্বাদু চপ বানান
2. চোখের সামনে জাঙ্কফুড রাখা
যখনই খিদে পায়, অনেকে রান্নাঘরের দিকে ছোটেন। রান্নাঘরের তাকে রাখা অনেক লোভনীয় খাবার যখন তখন খান, যা আসলে অস্বাস্থ্যকর। এর কারণ হচ্ছে, এসব খাবার রান্নাঘরে চোখ বরাবর রাখা হয়। অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এড়াতে তাই রান্নাঘর গোছগাছ রাখা বেশ জরুরি। বিশেষ করে বিস্কুট, চিপস, কোল্ড ড্রিংকস বা ঐ জাতীয় অন্যান্য খাবার একটু চোখের আড়ালে বা ওপরের দিকের তাকে রাখা উচিত। এর বদলে বাদাম, শুকনো ফল বা স্বাস্থ্যকর খাবার রান্নাঘরে এমনভাবে রাখতে হবে, যেগুলি সহজেই চোখে পড়ে।
3. স্ক্র্যাবার পরিষ্কার না করা
অনেকেই স্ক্র্যাবার দিয়ে বাসন মাজেন কিন্তু তা হয়তো রোজ পরিষ্কার করে রাখা হয়ে ওঠেনা। স্ক্র্যাবার ঠিকমতো পরিষ্কার না করলে তাতে ব্যাকটেরিয়া জন্মায় ও পরে বাসন-কোসনে ওই ব্যাকটেরিয়া চলে আসে। স্ক্র্যাবার ঠিকমতো ধুয়ে রাখার অভ্যাস খুব জরুরী ।
4. পুরোনো ননস্টিক কড়াই
অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে পুরোনো কড়াই ব্যবহার করেন। যাঁরা একই কড়াই তিন বছর বা তার বেশি সময় ধরে ব্যবহার করছেন, তাঁরা একে বিদায় দিতে পারেন। ননস্টিক কড়াই তেলমুক্ত রান্নার জন্য ভালো। কিন্তু দীর্ঘদিন ব্যবহারে এ ধরনের কড়াই থেকে ক্ষতিকর পদার্থ খাবারে মিশতে পারে। তাতে ক্যানসার সৃষ্টিকারী টেফলন থাকতে পারে। তাই বেশি পুরোনো ননস্টিক কড়াই ব্যবহার না করাই ভাল।
5. একই চপিং বোর্ড বারবার ব্যবহার
একই চপিং বোর্ড বারবার ব্যবহার করা ঠিক নয়। একই চপিং বোর্ডে মাংস ও সবজি না কাটার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। একই বোর্ডে এসব জিনিস কাটা স্বাস্থ্যকর নয় বলে পৃথক বোর্ড ব্যবহার করতে হবে।
আরও পড়ুন: বোধিসত্ত্ব বা জাতকের গল্প, যেগুলি অপূর্ব সদর্থক নীতিশিক্ষামূলক
6. ঠিকমতো ঢাকনা না দেওয়া
অনেকেই কোনো বয়ামের বা কৌটার ঢাকনা খুলে পরে ঠিকমতো আটকাতে ভুলে যান । এর ফলে ওই পাত্রে রাখা খাবারে পিঁপড়া বা অন্য পোকামাকড় ঢুকে পড়তে পারে । এ ছাড়া সামান্য ধাক্কা লাগলেই তা পড়ে গিয়ে রান্নাঘরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই বয়াম বা কৌটা আটকানোর ব্যাপারে বেশি সজাগ থাকতে হবে।
7. বেশি আঁচে রান্না
অধৈর্য হয়ে হয়তো অনেকেই বেশি আঁচে রান্না করতে শুরু করেন। আগুনের আঁচ বাড়ানোর ফলে রান্না একটু তাড়াতাড়ি হয় ঠিকই কিন্তু তাতে খাবারের গুণগত মান কম হয়। অনেক গন্ধ ও নমনীয় উপাদান হারিয়ে যায় এর মাঝে । যাঁরা বেশি সুস্বাদু রান্না করতে চান, তাঁরা মাঝারি বা অল্প আঁচে রান্না করুন।
8. পড়ে যাওয়া খাবার তোলা
অনেকেই রান্নাঘর ঠিকমতো পরিষ্কার করেন না। রান্নাঘরের মেঝেতে কিছু পড়ে গেলে তা দ্রুত তুলে তা খেয়ে ফেলেন বা রান্নার মধ্যে দেন। তাঁরা মনে করেন, পড়ে যাওয়ার পাঁচ সেকেন্ডের মধ্যে তুলে ফেললে কিছু হয় না। কিন্তু এ ধারণা ঠিক নয়। রান্নাঘর কতটা পরিষ্কার তা জানা জরুরি।
9. রান্নাঘরের স্ল্যাব ঠিকমতো পরিষ্কার করা
ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণু এড়াতে রান্নাঘরের স্ল্যাব ঠিকমতো পরিষ্কার রাখুন । সঠিক মনের জীবাণুনাশক ব্যবহার করে রান্নাঘরের স্ল্যাব পরিষ্কার করুন।