মা দুর্গার সংসার নেতাজির হাতেই ভেঙেছিল: এই কলকাতায়, কিভাবে?

মা দুর্গার সংসার নেতাজির হাতেই ভেঙেছিল: এই কলকাতায়, কিভাবে?
Picture credit: anandabazar.com

জাতীয়তাবাদী ভাবধারার জন্য আপামর ভারতবাসীর হৃদয়ে গেঁথে রয়েছেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু৷ চিরকাল থাকবেনও ৷ কিন্তু জানেন কী সচেতনভাবেই দুর্গার সংসার ভেঙেছিলেন তিনি? এই সংসার অপু-দুর্গার নয়৷ দেবী দুর্গার ৷ ঠিকই পড়েছেন৷ বছর ঘুরে কৈলাস থেকে মর্ত্যে আসা দুর্গার ঐক্যবদ্ধ সংসারকে বিচ্ছিন্ন করেছিলেন নেতাজি ৷ তবে সংসার ভাঙার পেছনে রয়েছে অন্য গল্প৷ দুর্গাপূজোর গরিমা রক্ষা করতে বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুভাষচন্দ্র বসু৷

আরও পড়ুন: কলাবউ আসলে কি? দুর্গাপুজোয় নবপত্রিকা স্নান কেন করানো হয়

বাঙালির দুর্গাপূজোর গল্পে চমকের শেষ নেই ৷ এটাও তেমনই একটি৷ তবে গল্প হলেও এই ঘটনা আদ্যপান্ত সত্যি ৷ উত্তর কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো কুমোরটুলি সার্বজনীন৷ কুমোরটুলির শিল্পীরা মিলেই এই পুজো শুরু করেন৷ পুজোর প্রথম সভাপতি ছিলেন স্যার হরিশংকর পাল ৷ সাতবছর পর কমিটির পক্ষ থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে পুজোর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়৷

কিন্তু নেতাজির সাফ কথা, যেখানে ইংরেজের তাঁবেদারি হয় সেখানে তিনি কোনওভাবেই জড়াবেন না ৷ স্যার হরিশংকর পালের দিকেই যে তাঁর এই ইঙ্গিত ছিল সেটা বুঝতে কারোর বাকি ছিল না ৷ হরিশংকর পাল নিজেও বুঝেছিলেন নেতাজির কটাক্ষ৷ কমিটির সভাপতির পদ থেকে সরে গিয়েছিলেন তিনি৷ সেইবছরই অর্থাৎ ১৯৩৮ সালে কুমোরটুলি সার্বজনীনের নতুন সভাপতি হলেন সুভাষচন্দ্র বসু..💛

কিন্তু পঞ্চমীর দিনই ঘটে গেল মহাবিপত্তি ৷ মন্ডপে চলে এসেছে একচালার ঠাকুর(সেইসময় একচালার প্রতিমাই পুজো হত)৷ হঠাৎ বিকেলে মন্ডপে আগুন লেগে যায় ৷ মন্ডপ, প্রতিমা, সব পুড়ে ছাই৷ অথচ পরের দিনই বোধন৷ নেতাজি ছুটে গেলেন শিল্পী গোপেশ্বর পালের কাছে৷ বললেন, যেভাবেই হোক এক রাতের মধ্যে ঠাকুর তৈরি করে দিতেই হবে৷ সেকথা শুনে তো শিল্পী অবাক৷ তা কি করে সম্ভব? মুহূর্তের মধ্যে নেতাজি সিদ্ধান্ত নিলেন আলাদা আলাদা করে প্রতিমা গড়া হবে

আরও পড়ুন: প্রাচীন দেবতার নূতন বিপদ: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

গোপেশ্বর পাল দুর্গা প্রতিমা গড়লেন৷ আর অন্যান্য শিল্পীরা গড়লেন লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশ৷ একচালা ভেঙে তৈরি হল পাঁচ চালার ঠাকুর৷ এক রাতের মধ্যেই সব তৈরি৷ ষষ্ঠীর দিন মন্ডপে এল প্রথম পাঁচ চালার ঠাকুর ৷ যা সম্ভব হয়েছিল নেতাজির জন্যই..

পুজো কমিটির বহু পুরোনো এক সদস্য দেবাশিস ভট্টাচার্যের কথায়, সেবার একেই তো পাঁচ চালা আর তার উপর দেবীর জমকালো সাজসজ্জা দেখে পুরোহিত সমাজ বেঁকে বসেছিল৷ তারপর শিল্পীর সঙ্গে বহু আলোচনার পর মেলে পুজোর পুরোহিত৷ তবে এটাই শেষ প্রথা ভাঙা ছিল না৷ পরের বছর নেতাজি পুজো কমিটির সভাপতি থাকাকালীন কুমোরটুলি সার্বজনীনের দেবী দুর্গার গায়ে উঠেছিল সত্যিকারের বাঘের ছাল

নেতাজী মানেই যে অভিনবত্ব তা সবক্ষেত্রেই প্রমানিত সত্য..

© এক যে ছিলো নেতা (facebook page: apni.ki.janen2.0 )

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top