অনুপ্রেরণামূলক বা শিক্ষামূলক গল্প : বাছাই করা 10টি সবার জন্য

অনুপ্রেরণামূলক বা শিক্ষামূলক 10 টি সুন্দর গল্প : সবার জন্য

10 টি অনুপ্রেরণামূলক বা শিক্ষামূলক গল্প উপস্থাপন করা হল যেগুলো আমরা হয়তো অনেকেই জানি। নতুন করে গল্পগুলো স্মরণ করে যদি কারোর উপকার হয় তাহলে এই প্রচেষ্টা সার্থক বলে মনে করব।

অন্যায়ের প্রশ্রয় – একটি শিক্ষামূলক গল্প

অন্যায়ের প্রশ্রয়

একটি ছেলে ছিল। ছোট বেলাতেই সে তার মাকে হারিয়েছিল। ফলে সে তার মাসীর কাছেই বড় হচ্ছিল। তার মা নেই বলে কেউ তাকে কখনও বকাঝকা করতো না। মাসী তাকে খুবই আদর করত। একদিন ছেলেটি স্কুলের এক সহপাঠীর পেন্সিল চুরি করে এনে তার মাসীকে দেখাল, মাসী তাকে তিরস্কার না করে তার প্রশংসাই করল। ছেলেটি আর একবার তার কোনো বন্ধুর বাড়ি থেকে একটা ভাল জামা চুরি করে এনে তার মাসীকে দিল, মাসী তাকে আরও প্রশংসা করল। ছেলেটি এরপর ক্রমশ বড় হয়ে যৌবনে উপনীত হলে আরও বড় রকমের সব চুরি করতে শুরু করল।

এমনি করতে করতে একদিন সে ধরা পড়ে গেল। তার চুরির বিচার হল আদালতে, তাতে তার প্রাণদণ্ডের আদেশ হল। বধ্য ভূমিতে নিয়ে যাওয়ার আগে তাকে জিজ্ঞাসা করা হল, কোনো সাধ আছে তোমার? কোনো ইচ্ছে থাকলে বলতে পার। এদিকে মাসী তার পুত্রবৎ ছেলেটির প্রাণদণ্ডের আদেশ শুনে বুক চাপড়ে কাঁদছিল ছেলেটি বধ্যভূমিতে যাবার আগে বলল – আমি আমার মাসীর কানে কানে কয়েকটি কথা বলতে চাই। এই অনুমতি মিলল । ফলে সে মাসীর কানের কাছে মুখ নিয়ে তার কানের লতি কামড়ে ছিঁড়ে দিল। তারপর বলল, মাসী, আজ তুমিই আমার প্রাণদণ্ডের কারণ। প্রথম থেকে আমার অন্যায়ের প্রশ্রয় না দিলে আজ আর আমাকে এইভাবে মরতে হোতো না ।

উপদেশ : ন্যায়-অন্যায় সম্পর্কে শিশুদের ছোটবেলা থেকেই শিক্ষা দিতে হয়।

নিজের বিশ্বাসে আস্থা রাখ – একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প

নিজের বিশ্বাসে আস্থা রাখ

বিশাল এক পাহাড়ের উপরে এক ঈগল বাসা বানিয়েছিলো। ঈগলের বাসায় ছিলো তার চার চারটি ডিম। প্রতিদিন সকালে সে এগুলো রেখে খাবারের খোঁজে উড়ে যেত।

একদিন ঈগল যখন বাসার বাইরে ছিলো তখন ভূমিকম্পে গোটা পাহাড় নড়ে উঠলো। এতে ঈগলের একটি ডিম বাসা থেকে ছিটকে পড়ে গেল। গড়াতে গড়াতে সেই ডিম এসে পড়লো পাহাড়ের নিচের এক মুরগীর বাসার উঠোনে ।

মুরগী সেই ডিমটিকে নিজের বাসায় নিয়ে এলো। অন্যান্য ডিমের সাথে রাখলো। যত্ন করে তা দিতে থাক…লো। একদিন সেই ডিম ফুটে ঈগলের একটি সুন্দর বাচ্চাও বের হলো। মুরগীর বাচ্চাদের সাথেই ঈগলের বাচ্চাটি বড় হয়ে উঠতে লাগলো।

কিন্তু সে ভেতর থেকে যে সবসময় অন্য কিছু অনুভব করতো। আকাশে একদিন ঈগলের একটা ঝাঁককে উড়ে বেড়াতে দেখে সে মুরগীকে বললো, ইস, যদি আমিও তাদের মত উড়ে বেড়াতে পারতাম। মুরগী হেসে উত্তর দিলো, তুমি কিভাবে উড়বে? তুমি তো মুরগী এবং মুরগী কখনো উড়ে না।

ঈগল মাঝে মাঝেই তার স্বগোত্রীয়দের উড়ে বেড়াতে দেখতো এবং স্বপ্ন দেখতো সেও তাদের মতই উড়ে বেড়াবে।

কিন্তু প্রতিবার সে তার স্বপ্নের কথা জানালে মুরগী বলতো যে এটা একেবারেই অসম্ভব। মুরগীর এই কথাটিই ঈগল বিশ্বাস করতে শিখলো এবং তার জীবনটা বাকী মুরগীদের মতই কাটিয়ে দিলো। অনেক দিন এভাবে কাটানোর পর একদিন সে মারাও গেল।

উপদেশ : তুমি যা বিশ্বাস করতে শেখো একদিন তুমি তাই হয়ে উঠবে।

আরও পড়ুন: গোপাল ভাঁড়ের গল্প : 10টি সেরা হাসির গল্প

ধৈর্যের ফল – একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প

গাছের কোটর
গাছের কোটর

একদা এক গ্রামে এক শিয়াল বাস করতো। কিছুদিন খাবার না পেয়ে পেয়ে শেয়ালের পেটটা এক্কেবারে চুপসে গেল। একদিন সে বাধ্য হয়ে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ল। পথে যেতে যেতে হঠাৎ তার চোখে পড়ল একটা ওক গাছের কোটরে বেশ কিছু রুটি আর মাংস রাখা আছে। রাখাল বালকদের কেউ হয়ত পরে খাবে বলে রেখে দিয়েছে। শেয়ালটা ঐ খাবার দেখেই কোটরের ভেতর ঢুকে পড়ল। আর গপ গপ করে খাবারগুলো সব চেটেপুটে খেয়ে নিল। ফলে তার চোসানো পেটটা হয়ে উঠল দারুণ মোটা। এবার সে আর কোটর থেকে বেরোতে পারল না। অনেক চেষ্টা করেও বেরোতে না পেরে সে কেঁউ কেঁউ করে কাঁদতে লাগল ।

পথ দিয়ে তখন আর একটা শেয়াল যাচ্ছিল। যেতে যেতে কোটরে আটকে পড়া শেয়ালকে কেঁউ কেঁউ করে কাঁদতে দেখে বলল – কি হল ভাই, তোমার? তুমি কেঁউ কেঁউ করছ কেন? কোটরে আটকে পড়া শেয়ালটা তখন তার মুশকিলের কথা তাকে খুলে বলল। তখন পথচারী শেয়ালটা বলল, ওঃ তাই বুঝি! তা একটু সবুর কর, পেট তোমার আবার আগেকার মত শুকনো হয়ে যাবে। তখন অনায়াসে তুমি ঐ কোটরে থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে।

উপদেশ : ধৈর্যের ফল ভাল হয় ।

নতি স্বীকার – একটি নীতিশিক্ষামূলক গল্প

একদা এক বনে জলপাই গাছ আর নলখাগড়ার গাছ ছিল। একদিন ওদের মধ্যে খুব তর্ক শুরু হল। তর্কের বিষয় ছিল কার শক্তি এবং সহ্যগুণ বেশি তাই নিয়ে। জলপাই গাছ নলখাগড়াকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বলছিল—তুই আর মুখ নেড়ে কথা বলিস না। তোর গায়ের জোর আমার খুব জানা আছে। একটু বাতাস বইলেই তো তুই নুয়ে পড়িস। নলখাগড়া গাছ এ কথার কোনো জবাব দিল না। একটু পরেই উঠল প্রচণ্ড ঝড়। নলখাগড়া নুয়ে পড়ে পড়ে, ঝড়ের ঝাপটা এড়িয়ে যেতে লাগল। আর জলপাই গাছ দাঁড়িয়ে ঝড় রুখতে গিয়ে তার দাপটে হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল ।

উপদেশ : শক্তিশালীর কাছে নতি স্বীকার দোষের নয় ।

আরও পড়ুন: নেতাজিও কলকাতায় অভিনব দুর্গা পূজা করেছিলেন

অভিজ্ঞতা – অনুপ্রেরণামূলক গল্প

একদা এক মাঠের পাশে একটা খাবার বাড়ি ছিল। খাবার বাড়ির সামনে একটা কুকুর ঘুমাচ্ছিল। তাকে ঐরকমভাবে ঘুমোতে দেখে পা টিপে টিপে এক নেকড়ে এগিয়ে এল তাকে ধরে খাওয়ার জন্য। কুকুরটা ততোক্ষণে জেগে গেছে। নেকড়েটা সবে তার গায়ে কামড় বসাতে যাচ্ছে এমন সময় কুকুরটা একলাফে তার থেকে কিছুটা দূরে সরে গিয়ে বলল–শোন একটা ভাল কথা তোমাকে বলি । আমাকে এখন খেয়ে তোমার তেমন সুবিধে হবে না! আমি বড্ড রোগা হয়ে গেছি। পেটে বহু দিন ভালমন্দ পড়েনি। তাই আমাকে খেয়ে তোমার পেটও ভরবে না। আমার মালিকের বাড়িতে আজ মহাভোজ হবে, আর সেই ভোজের খাবার খেয়ে একটু মোটাসোটা হয়ে নিই আমি। তারপর এসে আমাকে খেও, তাতে মজা পাবে, পেটও বেশ ভরবে তোমার।

কুকুরের এই কথা শুনে নেকড়ে তখন আর তাকে না খেয়ে চলে গেল। পরদিন কুকুরের ভোজ খাওয়া হয়ে গেছে ভেবে আবার সেই নেকড়ে এল। এসে দেখল কুকুরটা খামার বাড়ির ছাদের ওপর নাক ডাকিয়ে ঘুমোচ্ছে। সে তখন কুকুরটাকে ডেকে বলল – আমি এসে গেছি, এবার তুমি নেমে এস। আমাদের চুক্তিমত কাজ কর। কুকুরটা তখন হাসতে হাসতে বলল, নিচে মাটিতে ঘুমন্ত অবস্থায় যদি আমাকে আবার কোনোদিন খেতে আস তাহলে আমার ভোজ খাওয়া পর্যন্ত আর অপেক্ষা করতে যেও না ।

উপদেশ : বুদ্ধিমানেরা বিপদে পড়ে বুদ্ধির জোরে রক্ষা পায় ।

একমনে কাজ করতে হয় – একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প

একমনে কাজ করতে হয়

একদা এক মাঠে একদল ভেড়া চরে বেড়াচ্ছিল। ভেড়ার পাল বিকেল হতেই বাড়ি ফেরার জন্যে এগিয়ে চলছিল। ভেড়ার পাল অনেকটা এগিয়ে গেল কিন্তু একটি ভেড়ার ছানা দলের অনেক পেছনে পড়ে গেল। একটা নেকড়ে বাঘ এই অবস্থায় ভেড়ার ছানাটিকে দেখতে পেয়ে নিঃশব্দে তার পিছু নিল। বাচ্চা ভেড়াটা নেকড়েটাকে দেখতে পেল। সে বলল – বুঝেছি তুমি আমাকে ধরে খেতে চাও, এই তো? কিন্তু একটা শর্ত আছে আমার। মরবার আগে আমি বাঁশির সুরের সঙ্গে নাচতে চাই। তাই আমার অনুরোধ, তুমি বাঁশি বাজাও আমি তালে তালে নাচি।

তারপর— নেকড়ে ভেড়ার ছানার এই কথা শুনে বাঁশি বাজাতে লাগল আর তার সঙ্গে চললো বাচ্চা ভেড়াটার নাচ আর সেই বাজনা আর নাচের আওয়াজ শুনে সেখানে একদল মেষপালক কুকুর এসে জুটল। নেকড়েকে দেখেই তারা তার দিকে ধাওয়া করল। নেকড়ে ছুটতে ছুটতে কোনোমতে কুকুরদের হাত থেকে বাঁচল । তারপর অনেক দূরে যখন কুকুরদের নাগালের বাইরে চলে এল তখন এক জায়গায় বসে বিশ্রাম করতে করতে ভাবতে লাগল, খুব শিক্ষা হল আমার, কেমন বুন্ধুর মত আমি শিকার করতে এসে বাঁশি বাজাতে গেছিলাম।

উপদেশ : একমনে কাজ করতে হয়, না করলে কাজ পণ্ড হয়। বিপদও হতে পারে।

বিশ্বাস ঘাতকদের মরাই ভাল – নীতিশিক্ষামূলক গল্প

এক ছিল পাখি শিকারী। পাখি শিকারীটির বাড়িতে একদিন এক অতিথি এল। অতিথিকে খেতে দেবার মত সেদিন পাখি শিকারীর বাড়িতে কোনো পাখি অবশিষ্ট ছিল না। সে তার পোষা তিতির পাখিটাকেই তাই জবাই করার জন্যে নিয়ে এল। তিতিরটা তখন তাকে তিরস্কার করে বলল – তুমি এত বড় নিমকহারাম আগে তা জানতাম না। এতদিন অন্যসব পাখিদের ভুলিয়ে ভালিয়ে তোমার ফাঁদে এনে ফেলতাম আর তুমি কি না আজ আমাকেই জবাই করতে যাচ্ছো? পাখি শিকারী লোকটি উত্তর দিল, এই জন্যে তো, মানে স্রেফ এই কারণেই তো তোমার শাস্তি হওয়া উচিত। কারণ, তোমার জাত-ভাইদের ওপরেও তোমার কোনও মায়া-দয়া নেই ।

উপদেশ : নিমকহারামেরা সকলের কাছেই ঘৃণ্য হয় ।

নিজের দোষ অপরের ঘাড়ে চাপাতে গেলে – নীতিশিক্ষামূলক গল্প

একদা এক দেশে এক ডাকাত ছিল। সে একবার একটা লোককে খুন করে ফেলল। আশেপাশের লোকেরা ডাকাতটাকে ধরতে গেলে সে ছুটে পালিয়ে গেল। পথে যে সব লোক ডাকাতটার সামনে পড়ল তারা যখন তাকে জিজ্ঞাসা করল, তোমার হাতে ঐ লাল লাল দাগ কীসের? ডাকাতটি চপপট উত্তর দিল—ও, কিছু না! এইমাত্র আমি তুঁতগাছ থেকে নেমে এলাম কিনা তাই! যে লোকগুলো তার পিছু পিছু ধাওয়া করে আসছিল তারা ততোক্ষণে সেখানে পৌঁছে গেল। অতএব ডাকাতটা আর পালাতে পারল না। তারা তার দেহে একটা ধারাল গোঁজ পুঁতে | তাকে তুঁতগাছ ঝুলিয়ে দিল! তুঁতগাছটি তখন মৃত্যু পথযাত্রী ডাকাতকে বলল – তোমাকে মৃত্যু দণ্ড দিতে সাহায্য করার জন্যে আমার কিছুমাত্র আফসোস নেই, কারণ নিজে খুন করে হাতের রক্ত তুমি আমার গায়ের রক্ত হিসেবেই চালাতে চেয়েছিলে।

উপদেশ : ভাল লোকের গায়ে কাদা ছিটোতে গেলে সেও তোমায় ছেড়ে কথা বলবে না।

বুদ্ধিবল – একটি অনুপ্রেরণামূলক গল্প

বুদ্ধিবল

এক যে ছিল কুকুর। আর ছিল এক মোরগ। দুইজনের গলায় গলায় বন্ধুত্ব ছিল দুই বন্ধু একসঙ্গে দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছিল। পথে যেতে যেতে রাত্রি হয়ে গেল। আর রাত হতেই তখন মোরগটা এক গাছের ওপরে একটা ভাল ডাল বেছে নিয়ে ঘুমোতে গেল। আর কুকুরটা? কুকুরটা রইল ঐ গাছেরই গোড়ায় এক বড়সড় গর্তে। দু’জনেই ঘুমিয়ে পড়ল। এদিকে ভোর হয়ে আসছে। মোরগ তার অভ্যাস মত কোঁকর কোঁক করে ডেকে উঠল।

সেই ডাক শুনে এক খেঁকশিয়ালীর বড় লোভ হল। একটু দূরেই সে তার ছানাপোনা নিয়ে বাস করতো। মোরগের ডাক শুনে সে এগিয়ে এল সেই গাছের তলায়। তারপর খেঁকশিয়ালী গাছের ডালের দিকে চেয়ে মোরগকে মিষ্টি করে বলল, সত্যিই কি সুন্দর গলা তোমার, শুনে বুকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছে, নেমে এসো, আমি তোমায় আলিঙ্গন করি ।

এই কথা শুনে মোরগটিও মিষ্টি করে বলল, এই গাছের নিচে আমার দারোয়ান ঘুমোচ্ছে, তাকে আগে জাগাও, সে উঠে দরজা খুলে দিক, তখন আমি নিচে নামতে পারব। খেঁকশিয়ালী তখন কেবলই খুঁজছিল, কোথায় সেই দারোয়ান, কাকে দরোজা খোলার কথা বলতে হবে, অমনি কুকুর উঠে এক লাফে খেঁকশিয়ালীর ঘাড় চেপে ধরল। তারপর তাকে কামড়ে ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলল।

উপদেশ : দুর্বলেরা সবলের সাহায্য নিয়ে অতি সহজেই শত্রু দমন করতে পারে ।

কুকুর এক লাফে খেঁকশিয়ালীর ঘাড় চেপে ধরল
কুকুর এক লাফে খেঁকশিয়ালীর ঘাড় চেপে ধরল

মিথ্যা – একটি নীতিশিক্ষামূলক গল্প

একদা এক গ্রামে দুটি ছেলে ছিল। ছেলে দু’টি একদিন মাংসের দোকানে মাংস কিনতে গেল। কসাই যেইনা তাদের দিকে পিছন ফিরেছে, অমনি ছেলে দু’টির একজন কিছুটা মাংস তুলে নিয়ে অপর ছেলেটির পকেটে পুরে দিল। কসাই মুখ ফিরে তার রাখা মাংস দেখতে না পেয়ে ছেলে দুটিকে ধরল—তোরা নিশ্চয়ই আমার মাংস চুরি করেছিস? – যে ছেলেটি মাংস তুলে নিয়েছিল সে শপথ করে বলল – আমার কাছে কোনো মাংস নেই। আর যা পকেটে মাংস ছিল, সেও শপথ করে বলল—আমি তোমার মাংস চুরি করিনি। কসাই তখন তাদের চালাকি ধরতে না পেরে বলল – বুঝেছি বাবা, বুঝেছি, এ চালাকি বা শপথ করে তোমরা আমাকে ঠকাতে পারলে বটে, কিন্তু দেবতাদের চোখে ধুলো দিতে পারবে না।

উপদেশ : শপথ করে মিথ্যাকে সত্যে পরিণত করা যায় না।