পলাশ পোদ্দার
সতীত্ব খর্ব করে – অসাড় মাতৃত্ব
আমি কখনো চাইনি।
তাই তোমাদের ভাবনা –
আমার ভাবনায় স্থান পায়না বলেই
আমাকে কলঙ্কিত করতে –
তোমাদের আয়োজনের কোনো ত্রুটি নেই।
রক্তের দাগ মুছে রামধনুর ছটায় –
রাঙাতে যখনই গেছি কাঞ্চনজঙ্ঘায়,
কিংবা কোনো গাঁয়ের মেয়ে নির্জন পথে
হারায়ে লজ্জা – ভীষন রক্তাক্ত দেহে
অর্ধমৃত হয়ে পড়ে আছে।
যখনই গেছি তার কাছে
দেখে আমার দেহে –
তার দেহের রক্ত চিহ্ন ;
বিদ্রুপের বাণে করেছো দীর্ণ –
আমার মাতৃত্বে।
প্রাণে প্রাণে মিলাবো বলে সন্তানেরে
করেছি মানত, দিয়েছি ধর্না –
মসজিদ থেকে মন্দিরে।
কোরআন শরীফ বুকে ধরি,
উচ্চারিয়ে মহামন্ত্র ধ্বনি
কাটিয়েছি বিনিদ্র রজনী।
তবুও বিভেদ রচেছো ছলে, নানা কৌশলে
তখনই নির্দেশ দিয়েছি মাতৃত্বের বলে –
চোখের জল তুমি বাষ্প হয়ে উড়ে যাও
কাঠিণ্যের গৌরবে হে দেব –
আমার নারীত্ব জাগাও।
কোমলা মায়ের হৃদয়পাপড়ি ছিঁড়ে,
আমার মাতৃত্ব দানবের নখের আঁচড়ে
ফের লুন্ঠিত হলো।
সূর্যকিরন কিংবা চাঁদের আভা –
যখন একটু একটু করে বাড়াচ্ছে শোভা;
ধরেছে রঙ মায়াবী অরণ্যের মহুয়া-শালের
তখনই দুর্বৃত্ত পাতলো ফাঁদ বিষাক্ত জালের।
“জননী-বনানী মোর আষ্টে-পৃষ্টে বাঁধা”
না সইতে পেরে –
নারীত্বের ভয়াল রূপে ছুটেছি বনে।
শ্বাপদের ভাষায় –
ফের লুন্ঠিত মোর মাতৃত্ব।
লজ্জা মোর কিছু নাই –
সন্তানে রক্ষিতে জননী যদি মাতৃত্ব হারায়।
মায়ের স্নেহের ভাষা –
তার বুকের ভালবাসা,
তুমি দুর্বৃত্ত তা কি করে বুঝবে?
সমতলে করে বাস তুমি কেড়েছ লাঙ্গল
দাওনি ফলাতে তুমি সোনার ফসল।
তাই –
পাত্র হাতে করে
ছুটি দ্বার হতে দ্বারে।
ভিখারিণী বলে –
ছুড়েছো নোংরা সারা গায়ে।
দাওনি ভিক্ষা –
মারতে চেয়েছো মায়ে।
মাতৃত্বের অপমানে –
বিধাতা হেসেছে আপনমনে।
মদে-মত্ত অহংকারী – দেখোনি তখন
আমার সাথে অপমানিত বিশ্ব যখন।
সন্তানেরে অন্ন দিতে
মা যদি ছোটে ভিক্ষাপাত্র হাতে –
তোমাদের চোখে –
সেই উপহাসের সাজ,
আমার লজ্জা নয় –
আমার গৌরব আজ।।