রহস্যময় উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ: পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা বিচ্ছিন্ন উপজাতিকে রক্ষা করে

রহস্যময় উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ: পৃথিবীর সর্বাপেক্ষা বিচ্ছিন্ন উপজাতিকে রক্ষা করে
Picture credit: medium.com

বঙ্গোপসাগরের বুকে পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণ আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ। এই আন্দাবর-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ার থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে একটি দ্বীপ হল উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ। এটির আয়তন মাত্র ৭২ বর্গকিলোমিটার। চারদিক সমুদ্রে ঘেরা এই উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ বাসিন্দাদের সেন্টিনেলিজ নামে ডাকা হয়। তবে এই দ্বীপের ভিতরে কী রয়েছে, গোটা পৃথিবীর কাছে তা এখনও অজানা।

এখন পর্যন্ত উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের জনসংখ্যার কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি, তবে ধারণা করা হয়- এদের জনসংখ্যা ৩৯ থেকে ২৫০-এর মধ্যে, এবং সর্বোচ্চ ৫০০ জন। হাজার হাজার বছর ধরে সেন্টিনেলিজদের বসবাস এই দ্বীপে। দ্বীপে রয়েছে ঘন সবুজ বনভূমি, বাসিন্দাদের জন্য ছোট ছোট কুঁড়েঘর। এদের পেশা মূলত শিকার করা, মৃত পশুপাখির মাংস এবং ফলমূল তাদের খাবার।

অদ্ভুত ব্যাপার হলো তারা আগুনের ব্যবহার জানে না, চাষাবাদ করতেও জানে না। বস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে গাছের ছাল-বাকল এবং পশুর চামড়া। গবেষকদের ধারণা, হাজার বছর আগে সেন্টিনেলিজরা আফ্রিকা থেকে এসেছিল এই দ্বীপে।

আরও পড়ুন: দুশ্চিন্তা মাথায় যত কম থাকে ততই মঙ্গল

বহির্জগতের থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন রেখেই খুশি সেন্টিনেলিজরা। আত্মরক্ষায় লোহার তৈরি তীর ব্যবহার করে সেন্টিনেলিজরা। সেই তীরের ফলায় বিষ মাখানো থাকে। সেই তীরের আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাত কম নয়। বহু প্রচেষ্টার পরে সেন্টিনেলিজদের সামান্য কিছু ছবি পাওয়া যায়। তাতে দেখা যায়, দক্ষিণ ভারতীয়দের মতোই কৃষ্ণাঙ্গ তারা। সেই সঙ্গে উচ্চতা বেশ খাটো। মনে করা হয়, বৈচিত্র্যের অভাবেই সেন্টিনেলিজদের শারীরিক গড়ন এরকম হয়েছে।

বাইরের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে দিন কাটাচ্ছে উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের মানুষ। সম্পূর্ণ নিজের ভাষায় কথা বলেন সেন্টিনেলিজরা। এমনকি, আন্দামানের অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষও তাদের কথা বুঝতে পারেন না। সেই কারণেই বাকি পৃথিবীর মানুষ সেন্টিনেলিজদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। বাইরের জগতের মানুষ এসে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করুক, তা মোটেও পছন্দ করে না সেন্টিনেলিজরা।